নানা সাংস্কৃতিক ও নাট্যনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে লালমনিরহাট জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গন এক সময় মুখর হয়ে থাকতো। রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী থেকে শুরু করে বসন্ত উৎসবসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালিত হতো বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে। কিন্তু লালমনিরহাট জেলার সেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এখন আর নেই। এখন সরকারি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে হাতে গোনা কিছু অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে লালমনিরহাট জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
স্বাধীনতা পরবর্তী লালমনিরহাট জেলায় বেশকিছু সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠন গড়ে ওঠে। বিশেষ করে পল্লবী, অভিযান শিল্পী গোষ্ঠী, একতা সাহিত্য সংসদ, নব রবি, অগ্রদূত সংসদ, জেলা সাহিত্য পরিষদ, বনলতা সাহিত্য সংঘ, লাল থিয়েটার, রত্মাই থিয়েটার, রংধনু নাট্য গোষ্ঠী, সবুজ বাংলা নাট্য গোষ্ঠী, লালমনি থিয়েটার, বন্ধন সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদ, মুক্ত বিহঙ্গ, লালমনিরহাট জেলা বাউল সমিতি, উত্তর বঙ্গ সংস্কৃতিক পরিষদ, কবি সরুজ একাডেমী, কবি সংসদ বাংলাদেশ, অন্বেষা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, শাপলা শালুক, দীপ্তি শিখা তরুন সংঘ, সোনালী ক্লাব, বানীনগর রেনেসা ক্লাব, দিবাকর সংঘ, ধরলা সংগীত নিকেতনসহ আরও কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন লালমনিরহাট জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে মুখরিত করে রাখত সে সময়।
সত্তরের দশক থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত ছিল সেই স্বর্ণযুগ। তখন লালমনিরহাট জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সুনাম ছিল বৃহত্তর রংপুর জেলা জুড়ে। এরপর থেকেই নিষ্ক্রয় হতে শুরু করে সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠনগুলো। ঝিমিয়ে পড়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গন। সংগঠনগুলোর নিষ্ক্রিয়তায় এখন আর পাড়া-মহল্লাগুলোয় পালিত হয় না রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী, বসন্ত উৎসব বা নবান্ন উৎসব।
এখন শুধু সরকারি উদ্যোগে অথবা ছোটখাটো সংগঠনগুলোর উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের মতো দিনগুলো পালিত হয় কোনো রকমে।